আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না

এটাই মনে হয় যে আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না!

আমার অনেক পড়তে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি পড়তে বসলে পড়তে পারিনা। বাসার প্রেশার ভাল রেজাল্ট করতে হবে! যেভাবেই হোক ঢাকা মেডিকেল এ ভর্তি হতে হবে। কিন্তু আমি একটুও বায়োলজি পড়ে মজা পাই না। এখন জাস্ট এটাই মনে হয় যে আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না! 

এইচ এস সি’র পর আমি কোথাও টিকবো না। এটা ভেবে আরো পড়া হয় না। আমি পড়তেই পারছি না আমি আমার এইম (লক্ষ্য) নিয়েও দ্বিধায় আছি। আমাকে একটু সাজেশন দিন আমি কিভাবে পড়ায় মনোযোগ দিব? এমনও নয় যে আমি অনেক সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার  করি। আমি পড়ার টেবিলেই থাকি। বাসায় সবাই ভাবে আমি অনেক পড়ি। কিন্তু আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। আমি ঠিকমতো পড়তে পারছি না।

আমার অল্পতেই মন মেজাজ খারাপ হয়ে যায় ইদানীং। খিটখিটে হয়ে যাচ্ছি। আমি বুঝতে পারছি আমার পড়া খুব প্রয়োজন। কিন্তু কিছুতেই পারছি না

আমাদের পরামর্শ

তোমাকে ধন্যবাদ নিজের সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হয়ে সাহায্য নেয়ার জন্য। চিঠি পড়ে বুঝতে পারলাম তুমি তোমার পরিবারকে খুব ভালবাসো এবং তাদের খুশি করতে তাদের পছন্দের পেশা বেছে নেয়ার ব্যাপারে ভাবছো। প্রতিটি মানুষই আলাদা, তাদের পছন্দ- অপছন্দ বা আগ্রহের বিষয়ও আলাদা। আর সেটা গড়ে ওঠে নানা অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ যদি তার আগ্রহের কাজকে পেশা হিসাবে বেছে নেন, তবে পেশাগত সস্তুষ্টি বেড়ে যায়। অপর দিকে অপছন্দের কাজটি করতে করতে সেই পেশার প্রতি বিতৃষ্ণা  চলে আসতে পারে।

বায়োলজি পড়তে আগ্রহ পাওনা কিন্তু কী বিষয় তোমার ভালো লাগে সেটা জানাওনি। সেটা খুজে বের কর, সেই বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন পেশা কী কী আছে সে সস্পর্কে খোঁজ নাও। আজ  থেকে ২ বছর, ৫ বছর, ১০ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাও সেটা নিয়ে ভাবো। এগুলো তোমার লক্ষ্যকে শাণিত করবে। নিজে কী চাও সে বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে তোমার অবিভাবককে তোমার পছন্দের বিষয় সম্পর্কে বোঝাও।

তাছাড়া মনোযোগ বাড়ানোর জন্য কিছু কৌশল আছে । যেমনঃ

২ মিনিট মনোযোগ

চোখের সামনে একটা বিন্দু বেছে নাও। ২ মিনিট শুধুমাত্র ওই বিন্দুটা নিয়েই ভাববে। রং, আকার, আকৃতি সবকিছু খেয়াল কর। এই সময় অন্য চিন্তা এলে খেয়াল কর এবং আবার ওই বিন্দুর দিকে মনোযোগ ফিরিযে আনো। একই ভাবে ২ মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকেও মনোযোগ দিতে পারো।  নিয়মিত এই কৌশলটি অনুশীলন করলে মনোযোগ বাড়বে। তাছাড়া পড়ার সময়কে ভাগ করে নাও। একটানা ৪০ মিনিটের বেশি না পড়াই ভাল। ৪০ মিনিট পর পড়ার টেবিল থেকে উঠে পছন্দের কিছু করে আসো। ১০ মিনিট রিলাক্স করে আবার পড়তে বসো।

জিন্নাতুল বোরাক
+ posts

সহকারী অধ্যাপক

এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Post Author: জিন্নাতুল বোরাক

সহকারী অধ্যাপক এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।